Promoted Posts
উদ্ভিদের বিবর্তনের আশ্চর্য গল্প!
উদ্ভিদের বিবর্তনের আশ্চর্য গল্প! কল্পনা করুন, ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর জলে ভাসছিল এককোষী শেত্তলা (algae)। ধীরে ধীরে, সময়ের সাথে সাথে, পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে এই শেত্তলা থেকে বিবর্তিত হয়েছে আজকের জটিল বৃক্ষ, ফুল, লতা - বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। এই বিবর্তনের গল্প, কেবল নতুন প্রজাতির জন্মই নয়, বরং পৃথিবীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকেও সমৃদ্ধ করেছে। দীর্ঘকাল ধরে, বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে খাপ...
0 Comments 0 Shares 903 Views 0 Reviews
Recent Updates
All Countries
  • বিভিন্ন দেশের আইকিউ রেটিং
     বিভিন্ন দেশের আইকিউ রেটিং   দেশগুলো গড় আইকিউ জাপান 115 - 118,5 দক্ষিণ কোরিয়া 109 - 113 তাইওয়ান (এবং হংকং) 108 - 111 নেদারল্যান্ডস 107,5 - 110 জার্মানি 105 - 108 সুইজারল্যান্ড 105 - 107,5 ফ্রান্স 105 - 107 গ্রেট ব্রিটেন 105 - 107 আমেরিকা 104 - 107 বেলজিয়াম 103 - 107 অস্ট্রিয়া 102 -...
    0 Comments 0 Shares 1392 Views 0 Reviews
  • মালিকুলার বায়োলজী ও বায়োইনফরমেটিক্স : সাজেশন
    প্রথম অধ্যায় বংশগতির ভৌতভিত্তি সমহু আলোচনা করো। মলিকুলার বায়োলজি কি? এর পরিধি আলোচনা করো। সেন্টাল ডগমা ধারনাটি ব্যখ্যা করো। দ্বিতীয় অধ্যায় চারগ্রাফের সুত্রটি ব্যখ্যা করা। ডিএনএ এবং আরএনএ ভৌত এবং রাসায়নিক গঠন লিখ। tRNA এর গঠন চিত্র সহ লিখ। ইউক্রোমার্টিন ও হিটারোক্রোসাটিনের প্রার্থক্য লিখ। তৃতীয় অধ্যায় আদিকোষী ও প্রকৃতকোষী ডিএনএ এর অনুলিপনের মধ্যে পার্থক্য লিখ। চক্রাকার ডিএনএ...
    0 Comments 0 Shares 1392 Views 0 Reviews
  • সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীর তবে কি হয় বিধান
    সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীর তবে কি হয় বিধান
    0 Comments 0 Shares 1008 Views 0 Reviews
  • করনা ভাইরাস এবং বিবর্তন

    লিখেছেনঃ পুলক ঘটক
    করোনা ভাইরাস বিবর্তিত হয়, মানুষ তা জানে। এই ভাইরাস পরিবর্তন হয়ে এখন হয়েছে ওমিক্রন, তার আগে এসেছিল ডেল্টা। তার মানে এই নয় যে ওমিক্রন এসেছে বলে ডেল্টা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ওমিক্রনও আছে, ডেল্টাও আছে এবং তার আগের রূপগুলোও হারিয়ে যায়নি। এক ভাইরাস থেকে গত কয়েক মাসে একই গোত্রের কতগুলো নতুন প্রজাতির ভাইরাস তৈরি হয়ে হয়েছে তা বিস্ময়কর। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এসব তথ্য আবিষ্কার করছেন। আমরা সাধারণ মানুষ বিজ্ঞান তেমন না বুঝলেও বিবর্তনের এই বিষয়গুলো ঠিকই জানছি। মোটাদাগে শিক্ষিত প্রায় সকল বাঙালি এখন জীবনের উৎপাদনের পেছনে বিবর্তনের এই কারসাজি সম্পর্কে জেনেছে। বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন ধরণের জীবের আবির্ভাবের কথা মানুষ এখন বিশ্বাস করে। কিভাবে বিশ্বাস করে জানিনা। কারণ এই বিবর্তনতত্ত্ব ধর্মবিরোধী। একজন মানুষ জগতের সকল মানুষের আদিপিতা; সৃষ্টিকর্তা একজনকে তৈরি করেছিলেন, তার বংশ পরম্পরায় আজ এত এত মানুষ –এই ধরণের বিশ্বাসের বিরোধী এই বিবর্তনবাদ। মানুষ তাই বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করে না, শুধু করোনা ভাইরাসের বিবর্তন বিশ্বাস করে।

    এই মানুষ ভাষার বিবর্তন বিশ্বাস করেনা, সংস্কৃতির বিবর্তন বিশ্বাস করে না। একসময় কাব্য ও ব্যাকরণ দিয়ে গোছানো এত সুন্দর সুললিত ভাষা মানুষ জানত না, ভাষা পরিবর্তনশীল –এ কথা মানুষ বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করেনা, কারণ ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই বিশ্বাসের মারাত্মক অমিল। এক সময় এই পোশাক ছিলনা, এত উন্নত পোশাক বুনোনের মত যন্ত্রপাতি তখন ছিল না, এত উন্নত সুতা ছিলনা, রেশম, পশম, সুতিবস্ত্র কিছুই আবিষ্কার হয়নি –শাড়িও ছিলনা, বোরকাও ছিল না, ধুতিও ছিলনা, লুঙ্গিও ছিলনা– কোনো এক সময় মানুষ কাপড় বুনতেই জানতোনা, মানুষ নগ্ন থাকত, বন্য পশুর সঙ্গে বন্য মানুষের জীবনাচরণে বিশেষ কোনো তফাত ছিল না, সেটাই মানবের আদিরূপ –একথা আমাদের শিক্ষিত মানুষরা বিশ্বাস করে না।

    আকাশ থেকে নেমে আসা সভ্য এবং সংস্কৃতিবান একজোড়া মানব-মানবী থেকে বর্তমান মানবকূল বিস্তৃত হয়নি –একথা আমাদের শিক্ষিত জনগণ বিশ্বাস করে না। সৃষ্টিকুলের বিবর্তন ও সভ্যতার বিবর্তন আমাদের জনগণ বিশ্বাস করে না। তারা করোনা ভাইরাসের বিবর্তন বিশ্বাস করে।

    #"সত্য বল, সুপথে চল ওরে আমার মন।"
    করনা ভাইরাস এবং বিবর্তন লিখেছেনঃ পুলক ঘটক করোনা ভাইরাস বিবর্তিত হয়, মানুষ তা জানে। এই ভাইরাস পরিবর্তন হয়ে এখন হয়েছে ওমিক্রন, তার আগে এসেছিল ডেল্টা। তার মানে এই নয় যে ওমিক্রন এসেছে বলে ডেল্টা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ওমিক্রনও আছে, ডেল্টাও আছে এবং তার আগের রূপগুলোও হারিয়ে যায়নি। এক ভাইরাস থেকে গত কয়েক মাসে একই গোত্রের কতগুলো নতুন প্রজাতির ভাইরাস তৈরি হয়ে হয়েছে তা বিস্ময়কর। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এসব তথ্য আবিষ্কার করছেন। আমরা সাধারণ মানুষ বিজ্ঞান তেমন না বুঝলেও বিবর্তনের এই বিষয়গুলো ঠিকই জানছি। মোটাদাগে শিক্ষিত প্রায় সকল বাঙালি এখন জীবনের উৎপাদনের পেছনে বিবর্তনের এই কারসাজি সম্পর্কে জেনেছে। বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন ধরণের জীবের আবির্ভাবের কথা মানুষ এখন বিশ্বাস করে। কিভাবে বিশ্বাস করে জানিনা। কারণ এই বিবর্তনতত্ত্ব ধর্মবিরোধী। একজন মানুষ জগতের সকল মানুষের আদিপিতা; সৃষ্টিকর্তা একজনকে তৈরি করেছিলেন, তার বংশ পরম্পরায় আজ এত এত মানুষ –এই ধরণের বিশ্বাসের বিরোধী এই বিবর্তনবাদ। মানুষ তাই বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করে না, শুধু করোনা ভাইরাসের বিবর্তন বিশ্বাস করে। এই মানুষ ভাষার বিবর্তন বিশ্বাস করেনা, সংস্কৃতির বিবর্তন বিশ্বাস করে না। একসময় কাব্য ও ব্যাকরণ দিয়ে গোছানো এত সুন্দর সুললিত ভাষা মানুষ জানত না, ভাষা পরিবর্তনশীল –এ কথা মানুষ বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করেনা, কারণ ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই বিশ্বাসের মারাত্মক অমিল। এক সময় এই পোশাক ছিলনা, এত উন্নত পোশাক বুনোনের মত যন্ত্রপাতি তখন ছিল না, এত উন্নত সুতা ছিলনা, রেশম, পশম, সুতিবস্ত্র কিছুই আবিষ্কার হয়নি –শাড়িও ছিলনা, বোরকাও ছিল না, ধুতিও ছিলনা, লুঙ্গিও ছিলনা– কোনো এক সময় মানুষ কাপড় বুনতেই জানতোনা, মানুষ নগ্ন থাকত, বন্য পশুর সঙ্গে বন্য মানুষের জীবনাচরণে বিশেষ কোনো তফাত ছিল না, সেটাই মানবের আদিরূপ –একথা আমাদের শিক্ষিত মানুষরা বিশ্বাস করে না। আকাশ থেকে নেমে আসা সভ্য এবং সংস্কৃতিবান একজোড়া মানব-মানবী থেকে বর্তমান মানবকূল বিস্তৃত হয়নি –একথা আমাদের শিক্ষিত জনগণ বিশ্বাস করে না। সৃষ্টিকুলের বিবর্তন ও সভ্যতার বিবর্তন আমাদের জনগণ বিশ্বাস করে না। তারা করোনা ভাইরাসের বিবর্তন বিশ্বাস করে। #"সত্য বল, সুপথে চল ওরে আমার মন।"
    0 Comments 0 Shares 1094 Views 0 Reviews
  • মন দিয়ে পড়লাম। আপনারাও পড়তে পারেন। যিনি এই লেখাটি লিখেছেন তিনি মানুষ হিসেবেও দুর্দান্ত। ভাল-খারাপের সত্তা আসলেই মৌলিক। চাইলেই সবাই সমভাবে ভাল বা মন্দ হতে পারে না। যাহোক, লেখাটি পড়ে দেখুন।
    --------------------------------
    দেবী চৌধুরানী বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানী উপন্যাসের নায়িকা প্রফুল্লর মতো কোনও কল্পিত ব্যক্তিত্ব নন বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকদের বর্ণিত মহিলা ডাকাতও নন, তিনি ছিলেন রংপুরের মন্থনা এস্টেটের মহিলা জমিদার জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানী। সরকারী রেকর্ড এবং নথি তার ঐতিহাসিক অস্তিত্বের যথেষ্ট প্রমাণ দেয়।

    রংপুরের পীরগাছা উপজেলার মন্থনার জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার অনন্তরাম। কোচবিহার রাজার কর্মচারী জমিদার অনন্তরাম একজন বারেন্দ্রীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। কোচবিহার রাজার কর্মচারীর থাকা অবস্থায় তিনি উক্ত এলাকার জমিদারী লাভ করেন। তখন তিনি কোচবিহার মহারাজার শাসনাধীন আওতায় জমিদার ছিলেন। পরবর্তীতে ১৭১১ সালে মোগল বাহিনী কোচবিহার আক্রমণ করলে কোচবিহারের অন্যান্য জমিদারদের মতো মোগলদের পক্ষে গিয়ে মোগল শাসনের আওতাধীন জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। জমিদার অনন্তরামের পুত্র যাদবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর তার পুত্র রাঘবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর এই জমিদারীর পরিচালনা করতে থাকেন তার পুত্র নরেন্দ্র নারায়ণ।

    রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শিবুকুণ্ঠিরাম (বামন পাড়া বা ভুতছড়া) গ্রামের ব্রজ কিশোর রায় চৌধুরী ও কাশিশ্বরী দেবীর মেয়ে জয় দুর্গা দেবী।

    পীরগাছার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৭৬৫ সালে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী উত্তরাধিকারহীন অবস্থায় মারা গেলে জমিদারের স্ত্রী জয় দুর্গা দেবী জমিদারীর ভার গ্রহণ করেন এবং প্রায় তিন দশক তিনি জমিদারী পরিচালনা করেন। এই জয়া দুর্গা দেবীই ইতিহাসে খ্যাতনামা জমিদার “দেবী চৌধুরানী” নামে পরিচিত।

    দেবী সিংহ ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে হেস্টিংস কর্তৃক রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের ইজারাদার নিযুক্ত হয়। এ সময় ইংরেজদের পক্ষে রাজস্ব আদায়কারী দেবী সিংহ ও তার কর্মচারী হরেরামের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। রংপুর আর দিনাজপুর হলো দেবী সিং-এর শোষণ-উৎপীড়নের প্রধান রঙ্গভূমি। ইংরেজরা এমনিতেই রাজস্ব বাড়িয়েছিলো ক্ষমতা দখলের পর। দেবী সিং বাড়ালেন আরও দশগুণ। দিনাজপুরে দেবী সিং ১৮ প্রকারের কর আদায় করছিলেন। রংপুরে হররাম শুরু করলেন ২১ প্রকারের কর আদায়। এই কর দেবার সাধ্য কৃষকদের ছিল না। যারা কর দিতে পারল না তাদেরকে দেবী সিং-এর লোকেরা ধরে নিয়ে এসে নির্মমভাবে অত্যাচার করতে লাগলো। তাদের সহায়-সম্বল যা কিছু ছিল সব লুটে নিলো। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো।

    নারীরাও রক্ষা পায় না এদের অত্যাচার থেকে। নারীদের সম্রমহানী নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো। বিবস্ত্র করে নির্যাতন চলতো তাদের উপরে। বাঁশের খণ্ড অর্ধচন্দ্রাকারে চেঁছে তার দুই প্রান্ত নারীদের স্তনদ্বয়ে বিদ্ধ করে ছেড়ে দেওয়া হতো। বাঁশ স্তন বিচ্ছিন্ন করে ফেলতো। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে কত নারী যে আত্মহত্যা করেছে সে সময় তার হিসেব নেই।

    কৃষক কর দিতে না পারায় জমিদারদেরও খাজনা বাকি পরলো। ইটাকুমারীর জমিদার শিবচন্দ্র রায়কে কর বকেয়া থাকার কারণে দেবী সিংহের লেঠেল বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে রংপুরের নগর মীরগঞ্জে কুঠিবাড়ির (দেবী সিংহের) অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। বহু টাকা মুক্তিপণ দিয়ে শিব চন্দ্র রায় দেবী সিংহের হাত থেকে নিষ্কৃতি পান। সেই জাগগান থেকে জানা যায়, মুক্তি পেয়ে শিব চন্দ্র মন্থনার জমিদার দেবী চৌধুরানীর পরামর্শে রংপুরের সব জমিদারকে করের বোঝা ও কর আদায়ে দেবী সিংহের অত্যাচারের বিষয়ে ইটাকুমারী জমিদার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে এক আলোচনা চক্রে যোগদানের জন্য আহ্বান জানান।

    রংপুরের মনিষী মহামহোপাধ্যায় যাদবেশ্বর তর্করত্ন ইটাকুমারীর প্রখ্যাত লোক কবি রতিরাম দাসের জাগ গান সংগ্রহ করে রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় জাগের নাম দিয়ে একটি প্রথম শ্রেণির নিবন্ধ লেখেন। রতিরাম দাস লেখেন -
    ‘‘রঙ্গপুরে আছিল যতেক জমিদার
    সবাকে লিখিল পত্র সেঠটে আসিবার।
    নিজ এলাকার আর ভিন্ন এলাকার
    সক্কল প্রজাক ডাকে রোকা দিয়া তার।
    হাতি ঘোড়া বরকন্দাজে ইটাকুমারী ভরে
    সব জমিদার আইসে শিবচন্দ্রের ঘরে।
    পীরগাছার কর্ত্তী আইল জয় দুর্গা দেবী
    জগমোহনেতে বৈসে একে এক সবি।’’

    কিন্তু উপস্থিত জমিদাররা এই বিষয়ে কোন মতামত প্রকাশে অক্ষমতা প্রকাশ করায় রাজা শিবচন্দ্র রায় ক্ষুব্ধ হন। রতিরাম দাসের ভাষায় -

    ‘‘কারো মুখে নাই কথা হেটমুণ্ডে রয়
    রাগিয়া শিবচন্দ্রে রায় পুনরায় কয়।
    যেমন হারামজাদা রজপুত ডাকাইত
    খেদাও সর্ব্বায় তাক ঘাড়ে দিয়া হাত।’’

    কিন্তু এতেও কোন কাজ হয় না। ফলে -

    ‘‘জ্বলিয়া উঠিল তবে জয় দুর্গা মাই
    তোমরা পুরুষ নও শকতি কি নাই ?
    মাইয়া হয়া জনমিয়া ধরিয়া উহারে
    খণ্ড খণ্ড কাটিবারে পারোং তলোয়ারে।
    করিতে হৈবেনা আর কাহাকেও কিছু
    প্রজাগুলা করিবে সব হইব না নীচু।
    রাগি কয় শিবচন্দ্র থর থর কাঁপে
    ফ্যাণা ধরি উঠে যেমন রাগি গোঁমা সাপে।’’

    জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানীর ভৎসনায় ফল পাওয়া গেলেও মনে হয় না সব জমিদারের তরফ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। কেননা কবি রতিরাম দাস লিখেছেন -

    ‘‘চারি ভিতি হাতে আইল রঙ্গপুরে প্রজা
    ভদ্রগুলা আইল কেবল দেখিবার মজা।’’

    এই ভদ্রগুলাই হলেন সমকালীন ইংরেজ ভক্ত জমিদারেরা। আর এই আহ্বানের ফলাফল সম্পর্কে কবি বলেছেন -

    ‘‘ইটায় ঢেলের চোটে ভাঙ্গিল কারো হাড়
    দেবী সিং এর বাড়ী হৈল ইটার পাহাড়।
    খিড়কির দুয়ার দিয়া পলাইল দেবী সিং
    সাথে সাথে পালেয়া গেল সেই বারো ঢিং।
    দেবী সিং পালাইল দিয়া গাও ঢাকা
    কেউ বলে মুর্শিদাবাদ কেউ বলে ঢাকা।’’

    দেবী সিংহ সেই যাত্রায় কবির বর্ণনা মতোই পালিয়ে মুর্শিদাবাদের নশীপূরে চলে গেলেও এইভাবে সূত্রপাত হল ঐতিহাসিক রংপুর বিদ্রোহের। ফতেপুর চাকলার অগ্নিগর্ভ এ বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে গোটা রংপুর ও দিনাজপুরের গ্রামে গ্রামে।

    এসময় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে রংপুর কালেক্টর রিচার্ড গুডলাড ও সেনা কমান্ডার লে: ব্রেনান বেসামাল হয়ে পড়ে। ১৭৮৩ সালের বৈশাখ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার লে: ব্রেনান বিপুল সংখ্যক সেনা নিয়ে পীরগাছার অদূরে দেবী চৌধুরানীর বাহিনীর উপরে হামলা চালায়। জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানী ও শিবচন্দ্র রায়ের অনুগামী বিদ্রোহী প্রজারা ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই চালিয়ে যান। এবং সম্মুখ সমরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে দেবী চৌধুরানী, শিবচন্দ্র রায়, দেবী চৌধুরানীর ছোট ভাই কেষ্ট কিশোর চৌধুরী শহীদ হন। শহীদ হন অনেক বিদ্রোহী। বেঁচে যাওয়া অল্প সংখ্যক মানুষ স্বাধীনতা এই বীর যোদ্ধাদের মরদেহ আলাইকুড়ি নদী বেষ্টিত জঙ্গলে সমাহিত করেন। ওই জঙ্গলের ‘পবিত্র ঝাড়’। অনুরূপ, ইংরেজ বাহিনীর সাথে সামনাসামনি লড়াই করে যে জায়গায় দেবী চৌধুরানী নিহত হন সেই স্থানের নামকরণ করা হয় ‘নাপাই চণ্ডী’।

    লড়াইয়ের স্থানটি বর্তমান পীরগাছা থানায় অবস্থিত। আমাদের অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় না পারা কে ‘না পাই’ , ‘না পাইম’ বলে। এই স্থানে লড়াই করে দেবী চৌধুরানী (চণ্ডী মা) পারেননি, মানে ‘না পাইল চণ্ডী’। না পাইল চণ্ডী থেকে নাপাই চণ্ডী। এখনো ওই এলাকায় বৈশাখ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার ‘নাপাই চণ্ডীর মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়।

    পীরগাছা মন্থনার জমিদার হওয়া সত্ত্বেও দেবী চৌধুরানী তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে ‘চণ্ডী মা’ নামে জনসাধারণের নিকট শক্তির উৎস ও ভরসাস্থলে পরিণত হন। তাঁর নামানুসারে চৌধুরানী নামক একটা এলাকা ও রেলস্টেশন আজও তাঁর পূণ্যস্মৃতি বহন করে চলছে।

    ##বিভ্রান্তি_যার_সমাধান_আমি_পাইনি : ১৭৮৩ সালের বৈশাখ মাসে নাপাই চন্ডিতে দেবী চৌধুরানীর নিহত হওয়ার কথা অনেকের লেখাতেই পাওয়া যায়, যা আমি উপরে উল্লেখ করেছি। কিন্তু ১৭৯১ খ্রিঃ ১৯ অক্টোবর রংপুর জেলার বাতিলকৃত জমিদারদের তালিকায় জয় দুর্গা দেবীর নাম পাওয়া যায়। ডঃ মণিরুজামান লিখেছেন, ‘মনে হয় ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের আগুন প্রশমিত হলে ১৭৯০ খ্রিঃ আগে আগেই তিনি নিরুদ্দেশ জীবন কাটিয়ে নিজ জমিদারিতে পূর্ণ মর্যাদায় ফেরত আসেন। এ কারণেই বাতিলকৃত জমিদারের তালিকায় তার নাম প্রকাশ হয়েছিল’।

    অপরদিকে ১১৭৬ বঙ্গাব্দ (১৭৬৯-৭০ সাল) থেকে ১১৯৭ বঙ্গাব্দ (১৭৯০-৯১ সাল) পর্যন্ত সময় কমপক্ষে তিনি যে মন্থনার জমিদার ছিলেন তা তার প্রদত্ত দুই খানি সনদ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। উক্ত সনদের একখানি পীরপাল (১১৭৬ বঙ্গাব্দের ৫ই মাঘ) এবং অপরটি মুশকালী চুকানী পাট্টা (১১৯৭ বঙ্গাব্দ, ২৫ কার্তিক) উপরি উক্ত পাট্টা দু খানিতে তার জমিদারি শুরু ও শেষ জানা যায় না। তবে একথা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় যে তিনি ১৭৯০-৯১ সাল পর্যন্ত জমিদার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে দত্তক পুত্র রাজেন্দ্র নারায়ণ জমিদারির ভার গ্রহণ করেন এবং ১৮০৮-০৯ সালে হ্যামিল্টন বুকাননের রংপুর সফরের সময় তিনি মন্থনার জমিদার ছিলেন।

    আমার প্রশ্ন, জয় দুর্গা দেবী তবে মারা গেলেন কখন?

    ছবিঃ পীরগাছায় মন্থনা জমিদার বাড়ি ও রংপুর শহরের ফায়ার সার্ভিসের পিছনে মন্থনা হাউস।

    তথ্যসূত্র :
    রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা, ৩য় ভাগ (১৯০৯ সাল)
    ফকির মজনু শাহ - মুহাম্মদ আবু তালিব
    পলাশী যুদ্ধোত্তর আযাদী সংগ্রামের পাদপীঠ - হায়দার আলী চৌধুরী
    Historical Presence of Debi Chowdhurani : Gautam Kumar Das
    রংপুরের ইতিহাস - ডঃ মুহাম্মদ মণিরুজামান
    মন দিয়ে পড়লাম। আপনারাও পড়তে পারেন। যিনি এই লেখাটি লিখেছেন তিনি মানুষ হিসেবেও দুর্দান্ত। ভাল-খারাপের সত্তা আসলেই মৌলিক। চাইলেই সবাই সমভাবে ভাল বা মন্দ হতে পারে না। যাহোক, লেখাটি পড়ে দেখুন। -------------------------------- দেবী চৌধুরানী বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানী উপন্যাসের নায়িকা প্রফুল্লর মতো কোনও কল্পিত ব্যক্তিত্ব নন বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকদের বর্ণিত মহিলা ডাকাতও নন, তিনি ছিলেন রংপুরের মন্থনা এস্টেটের মহিলা জমিদার জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানী। সরকারী রেকর্ড এবং নথি তার ঐতিহাসিক অস্তিত্বের যথেষ্ট প্রমাণ দেয়। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার মন্থনার জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার অনন্তরাম। কোচবিহার রাজার কর্মচারী জমিদার অনন্তরাম একজন বারেন্দ্রীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। কোচবিহার রাজার কর্মচারীর থাকা অবস্থায় তিনি উক্ত এলাকার জমিদারী লাভ করেন। তখন তিনি কোচবিহার মহারাজার শাসনাধীন আওতায় জমিদার ছিলেন। পরবর্তীতে ১৭১১ সালে মোগল বাহিনী কোচবিহার আক্রমণ করলে কোচবিহারের অন্যান্য জমিদারদের মতো মোগলদের পক্ষে গিয়ে মোগল শাসনের আওতাধীন জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। জমিদার অনন্তরামের পুত্র যাদবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর তার পুত্র রাঘবেন্দ্র নারায়ণ, এরপর এই জমিদারীর পরিচালনা করতে থাকেন তার পুত্র নরেন্দ্র নারায়ণ। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শিবুকুণ্ঠিরাম (বামন পাড়া বা ভুতছড়া) গ্রামের ব্রজ কিশোর রায় চৌধুরী ও কাশিশ্বরী দেবীর মেয়ে জয় দুর্গা দেবী। পীরগাছার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৭৬৫ সালে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী উত্তরাধিকারহীন অবস্থায় মারা গেলে জমিদারের স্ত্রী জয় দুর্গা দেবী জমিদারীর ভার গ্রহণ করেন এবং প্রায় তিন দশক তিনি জমিদারী পরিচালনা করেন। এই জয়া দুর্গা দেবীই ইতিহাসে খ্যাতনামা জমিদার “দেবী চৌধুরানী” নামে পরিচিত। দেবী সিংহ ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে হেস্টিংস কর্তৃক রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের ইজারাদার নিযুক্ত হয়। এ সময় ইংরেজদের পক্ষে রাজস্ব আদায়কারী দেবী সিংহ ও তার কর্মচারী হরেরামের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। রংপুর আর দিনাজপুর হলো দেবী সিং-এর শোষণ-উৎপীড়নের প্রধান রঙ্গভূমি। ইংরেজরা এমনিতেই রাজস্ব বাড়িয়েছিলো ক্ষমতা দখলের পর। দেবী সিং বাড়ালেন আরও দশগুণ। দিনাজপুরে দেবী সিং ১৮ প্রকারের কর আদায় করছিলেন। রংপুরে হররাম শুরু করলেন ২১ প্রকারের কর আদায়। এই কর দেবার সাধ্য কৃষকদের ছিল না। যারা কর দিতে পারল না তাদেরকে দেবী সিং-এর লোকেরা ধরে নিয়ে এসে নির্মমভাবে অত্যাচার করতে লাগলো। তাদের সহায়-সম্বল যা কিছু ছিল সব লুটে নিলো। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো। নারীরাও রক্ষা পায় না এদের অত্যাচার থেকে। নারীদের সম্রমহানী নিত্য দিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো। বিবস্ত্র করে নির্যাতন চলতো তাদের উপরে। বাঁশের খণ্ড অর্ধচন্দ্রাকারে চেঁছে তার দুই প্রান্ত নারীদের স্তনদ্বয়ে বিদ্ধ করে ছেড়ে দেওয়া হতো। বাঁশ স্তন বিচ্ছিন্ন করে ফেলতো। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে কত নারী যে আত্মহত্যা করেছে সে সময় তার হিসেব নেই। কৃষক কর দিতে না পারায় জমিদারদেরও খাজনা বাকি পরলো। ইটাকুমারীর জমিদার শিবচন্দ্র রায়কে কর বকেয়া থাকার কারণে দেবী সিংহের লেঠেল বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে রংপুরের নগর মীরগঞ্জে কুঠিবাড়ির (দেবী সিংহের) অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। বহু টাকা মুক্তিপণ দিয়ে শিব চন্দ্র রায় দেবী সিংহের হাত থেকে নিষ্কৃতি পান। সেই জাগগান থেকে জানা যায়, মুক্তি পেয়ে শিব চন্দ্র মন্থনার জমিদার দেবী চৌধুরানীর পরামর্শে রংপুরের সব জমিদারকে করের বোঝা ও কর আদায়ে দেবী সিংহের অত্যাচারের বিষয়ে ইটাকুমারী জমিদার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে এক আলোচনা চক্রে যোগদানের জন্য আহ্বান জানান। রংপুরের মনিষী মহামহোপাধ্যায় যাদবেশ্বর তর্করত্ন ইটাকুমারীর প্রখ্যাত লোক কবি রতিরাম দাসের জাগ গান সংগ্রহ করে রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় জাগের নাম দিয়ে একটি প্রথম শ্রেণির নিবন্ধ লেখেন। রতিরাম দাস লেখেন - ‘‘রঙ্গপুরে আছিল যতেক জমিদার সবাকে লিখিল পত্র সেঠটে আসিবার। নিজ এলাকার আর ভিন্ন এলাকার সক্কল প্রজাক ডাকে রোকা দিয়া তার। হাতি ঘোড়া বরকন্দাজে ইটাকুমারী ভরে সব জমিদার আইসে শিবচন্দ্রের ঘরে। পীরগাছার কর্ত্তী আইল জয় দুর্গা দেবী জগমোহনেতে বৈসে একে এক সবি।’’ কিন্তু উপস্থিত জমিদাররা এই বিষয়ে কোন মতামত প্রকাশে অক্ষমতা প্রকাশ করায় রাজা শিবচন্দ্র রায় ক্ষুব্ধ হন। রতিরাম দাসের ভাষায় - ‘‘কারো মুখে নাই কথা হেটমুণ্ডে রয় রাগিয়া শিবচন্দ্রে রায় পুনরায় কয়। যেমন হারামজাদা রজপুত ডাকাইত খেদাও সর্ব্বায় তাক ঘাড়ে দিয়া হাত।’’ কিন্তু এতেও কোন কাজ হয় না। ফলে - ‘‘জ্বলিয়া উঠিল তবে জয় দুর্গা মাই তোমরা পুরুষ নও শকতি কি নাই ? মাইয়া হয়া জনমিয়া ধরিয়া উহারে খণ্ড খণ্ড কাটিবারে পারোং তলোয়ারে। করিতে হৈবেনা আর কাহাকেও কিছু প্রজাগুলা করিবে সব হইব না নীচু। রাগি কয় শিবচন্দ্র থর থর কাঁপে ফ্যাণা ধরি উঠে যেমন রাগি গোঁমা সাপে।’’ জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানীর ভৎসনায় ফল পাওয়া গেলেও মনে হয় না সব জমিদারের তরফ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। কেননা কবি রতিরাম দাস লিখেছেন - ‘‘চারি ভিতি হাতে আইল রঙ্গপুরে প্রজা ভদ্রগুলা আইল কেবল দেখিবার মজা।’’ এই ভদ্রগুলাই হলেন সমকালীন ইংরেজ ভক্ত জমিদারেরা। আর এই আহ্বানের ফলাফল সম্পর্কে কবি বলেছেন - ‘‘ইটায় ঢেলের চোটে ভাঙ্গিল কারো হাড় দেবী সিং এর বাড়ী হৈল ইটার পাহাড়। খিড়কির দুয়ার দিয়া পলাইল দেবী সিং সাথে সাথে পালেয়া গেল সেই বারো ঢিং। দেবী সিং পালাইল দিয়া গাও ঢাকা কেউ বলে মুর্শিদাবাদ কেউ বলে ঢাকা।’’ দেবী সিংহ সেই যাত্রায় কবির বর্ণনা মতোই পালিয়ে মুর্শিদাবাদের নশীপূরে চলে গেলেও এইভাবে সূত্রপাত হল ঐতিহাসিক রংপুর বিদ্রোহের। ফতেপুর চাকলার অগ্নিগর্ভ এ বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে গোটা রংপুর ও দিনাজপুরের গ্রামে গ্রামে। এসময় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে রংপুর কালেক্টর রিচার্ড গুডলাড ও সেনা কমান্ডার লে: ব্রেনান বেসামাল হয়ে পড়ে। ১৭৮৩ সালের বৈশাখ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার লে: ব্রেনান বিপুল সংখ্যক সেনা নিয়ে পীরগাছার অদূরে দেবী চৌধুরানীর বাহিনীর উপরে হামলা চালায়। জয় দুর্গা দেবী চৌধুরানী ও শিবচন্দ্র রায়ের অনুগামী বিদ্রোহী প্রজারা ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই চালিয়ে যান। এবং সম্মুখ সমরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে দেবী চৌধুরানী, শিবচন্দ্র রায়, দেবী চৌধুরানীর ছোট ভাই কেষ্ট কিশোর চৌধুরী শহীদ হন। শহীদ হন অনেক বিদ্রোহী। বেঁচে যাওয়া অল্প সংখ্যক মানুষ স্বাধীনতা এই বীর যোদ্ধাদের মরদেহ আলাইকুড়ি নদী বেষ্টিত জঙ্গলে সমাহিত করেন। ওই জঙ্গলের ‘পবিত্র ঝাড়’। অনুরূপ, ইংরেজ বাহিনীর সাথে সামনাসামনি লড়াই করে যে জায়গায় দেবী চৌধুরানী নিহত হন সেই স্থানের নামকরণ করা হয় ‘নাপাই চণ্ডী’। লড়াইয়ের স্থানটি বর্তমান পীরগাছা থানায় অবস্থিত। আমাদের অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় না পারা কে ‘না পাই’ , ‘না পাইম’ বলে। এই স্থানে লড়াই করে দেবী চৌধুরানী (চণ্ডী মা) পারেননি, মানে ‘না পাইল চণ্ডী’। না পাইল চণ্ডী থেকে নাপাই চণ্ডী। এখনো ওই এলাকায় বৈশাখ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার ‘নাপাই চণ্ডীর মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। পীরগাছা মন্থনার জমিদার হওয়া সত্ত্বেও দেবী চৌধুরানী তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে ‘চণ্ডী মা’ নামে জনসাধারণের নিকট শক্তির উৎস ও ভরসাস্থলে পরিণত হন। তাঁর নামানুসারে চৌধুরানী নামক একটা এলাকা ও রেলস্টেশন আজও তাঁর পূণ্যস্মৃতি বহন করে চলছে। ##বিভ্রান্তি_যার_সমাধান_আমি_পাইনি : ১৭৮৩ সালের বৈশাখ মাসে নাপাই চন্ডিতে দেবী চৌধুরানীর নিহত হওয়ার কথা অনেকের লেখাতেই পাওয়া যায়, যা আমি উপরে উল্লেখ করেছি। কিন্তু ১৭৯১ খ্রিঃ ১৯ অক্টোবর রংপুর জেলার বাতিলকৃত জমিদারদের তালিকায় জয় দুর্গা দেবীর নাম পাওয়া যায়। ডঃ মণিরুজামান লিখেছেন, ‘মনে হয় ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের আগুন প্রশমিত হলে ১৭৯০ খ্রিঃ আগে আগেই তিনি নিরুদ্দেশ জীবন কাটিয়ে নিজ জমিদারিতে পূর্ণ মর্যাদায় ফেরত আসেন। এ কারণেই বাতিলকৃত জমিদারের তালিকায় তার নাম প্রকাশ হয়েছিল’। অপরদিকে ১১৭৬ বঙ্গাব্দ (১৭৬৯-৭০ সাল) থেকে ১১৯৭ বঙ্গাব্দ (১৭৯০-৯১ সাল) পর্যন্ত সময় কমপক্ষে তিনি যে মন্থনার জমিদার ছিলেন তা তার প্রদত্ত দুই খানি সনদ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। উক্ত সনদের একখানি পীরপাল (১১৭৬ বঙ্গাব্দের ৫ই মাঘ) এবং অপরটি মুশকালী চুকানী পাট্টা (১১৯৭ বঙ্গাব্দ, ২৫ কার্তিক) উপরি উক্ত পাট্টা দু খানিতে তার জমিদারি শুরু ও শেষ জানা যায় না। তবে একথা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় যে তিনি ১৭৯০-৯১ সাল পর্যন্ত জমিদার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে দত্তক পুত্র রাজেন্দ্র নারায়ণ জমিদারির ভার গ্রহণ করেন এবং ১৮০৮-০৯ সালে হ্যামিল্টন বুকাননের রংপুর সফরের সময় তিনি মন্থনার জমিদার ছিলেন। আমার প্রশ্ন, জয় দুর্গা দেবী তবে মারা গেলেন কখন? ছবিঃ পীরগাছায় মন্থনা জমিদার বাড়ি ও রংপুর শহরের ফায়ার সার্ভিসের পিছনে মন্থনা হাউস। তথ্যসূত্র : রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা, ৩য় ভাগ (১৯০৯ সাল) ফকির মজনু শাহ - মুহাম্মদ আবু তালিব পলাশী যুদ্ধোত্তর আযাদী সংগ্রামের পাদপীঠ - হায়দার আলী চৌধুরী Historical Presence of Debi Chowdhurani : Gautam Kumar Das রংপুরের ইতিহাস - ডঃ মুহাম্মদ মণিরুজামান
    0 Comments 0 Shares 1032 Views 0 Reviews
  • মানুষ বড় কোনো সংকটে পড়লে ঈশ্বরের স্মরণাপন্ন হয়। বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাহায্য চায়। বর্তমানে আমি সপরিবারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। গলাব্যথায় কাতর আছি, বিক্ষিপ্ত নানা চিন্তা মাথায় আসছে –যদি মারা যাই......!!!


    লিখেছেনঃ পুলক ঘটক
    এই মুহুর্তে ভগবানকে ডেকে রোগমুক্তি চাইব, নাকি মরার পর যাতে নরকে শাস্তির জন্য না পাঠায় সেই প্রার্থনা করব? আমি খেয়াল করে দেখেছি, চরম বিপদের সময় এমনকি মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তেও মানুষ ঈশ্বরকে ডাকে বাঁচার জন্য। পরকালে যাবে, সেখানে গিয়ে নরকের বদলে স্বর্গ পাবে –এই আশায় মানুষ বিপদের সময় ভগবানকে ডাকে না। আমি যেহেতু চিকিৎসকের স্মরণ নিয়েছি এবং বিজ্ঞানীদের আবিস্কৃত পন্থায় ডায়াগনোসিস ও ওষুধের ওপর ভরসা রেখেছি, তাই বাঁচার জন্য ভগবানকে ডাকব না। বরং মরার পর আমাকে যেন শাস্তি না দেয় তার জন্য অল্পবিস্তর ভাল কাজ করতে চাই। ধর্মে ভালকাজ বা ভগবানকে সন্তুষ্ট করার সবচেয়ে উত্তম উপায় হল ভগবানের সৈনিক হয়ে যাওয়া; ভগবানের সৈনিক হিসেবে তার ধর্মকে রক্ষার জন্য লড়াই করা। আমি লেখার মাধ্যমে আপাতত তাই করব। রোগশয্যায় থেকে একমাত্র লেখা ছাড়া কি-বা ভাল কাজ করার আছে? শুনুন তবে –

    "এরা সবসময় ধর্মের খারাপ দিকগুলি তুলে ধরে" -এই মন্তব্যটি ইদানিং অহরহ চোখে পড়ছে। কিছু মানুষ ফেসবুকে "ধর্মের খারাপ দিকগুলি" তুলে ধরার কারণে বহুমানুষ ক্ষুব্ধ। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, "ধর্মের খারাপ দিক" থাকে কিভাবে? এ তো অসম্ভব। ঈশ্বরের বাণী কি খারাপ হতে পারে? কোনো ধর্মের একটা লাইন বা একটা শব্দও খারাপ হতে পারেনা। ধর্মীয় বইয়ে খারাপ কোনোকিছু থাকলে বুঝতে হবে, ঐ বইটি আদৌ ঈশ্বরের বাণী নয়। অথবা ঐ বইয়ে যা আছে, তা খারাপ হলেও খারাপ নয়। কারণ তা ঈশ্বরের বাণী। ঐশী গ্রন্থে থাকলে ধরে নিতে হবে স্বামীর চিতায় নারীদের পুড়িয়ে মারা খারাপ কাজ নয়। আর, খারাপ মনে করলে বুঝে নিতে হবে ঐ বই আদৌ ঈশ্বরের কথা নয়। দুটোর একটা ঠিক হবে, দুটোই ঠিক হতে পারে না। ভগবান তার ধর্মে কৃতদাস রাখা নিষিদ্ধ, অবৈধ এবং অপরাধকর্ম হিসেবে ঘোষণা না দিয়ে থাকলে ধরে নিতে হবে দাসপ্রথা উত্তম। যুদ্ধে যারা হেরে গেছে তাদের নারী ও শিশুদের ধরে এনে যুদ্ধলব্ধ (মতান্তরে লুন্ঠনলব্ধ) মাল হিসেবে ভাগ করে নেওয়া, দাস বানানো, ধর্ষণ করার অধিকার দেওয়া, পশুর মত হাটেবাজারে মানুষ কেনাবেচা, যৌনদাসী উপহার নেওয়া, দাসীর উপর অধিকার ইত্যাদি কোনোকিছু ধর্মবইয়ে থাকলে ধরে নিতে হবে এগুলো ভাল কাজ। এগুলো খারাপ হলে ধরে নিতে বইটি ঈশ্বর পাঠাননি। মানুষ নিজ স্বার্থে এসব বিধান বানিয়েছে। ঐশী গ্রন্থের একটি শব্দও ভুল বা খারাপ হলে, সেই গ্রন্থটি আদৌ ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে এসেছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ আছে। কারণ ঈশ্বর ভুল করতে পারেন না। ধর্মীয় বইয়ের দাড়ি, কমা, সেমিকোলন থেকে শুরু করে কোনোকিছুই ভুল বা খারাপ হওয়ার সুযোগ নেই।

    আরেকটি দিক লক্ষ্মণীয়। তা হল, বহুমানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে "ধর্মের খারাপ দিক আছে।" বেশিরভাগ মানুষ ধর্মকে উত্তম মনে করলেও তার কিছু খারাপ দিকও আছে বলে বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাস স্ববিরোধী এবং ধর্মবিরোধী। বিশ্বাস করতে হবে, "ধর্মের কোনো খারাপ দিক নেই।"
    "সত্য বল, সুপথে চল ওরে আমার মন।"
    মানুষ বড় কোনো সংকটে পড়লে ঈশ্বরের স্মরণাপন্ন হয়। বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাহায্য চায়। বর্তমানে আমি সপরিবারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। গলাব্যথায় কাতর আছি, বিক্ষিপ্ত নানা চিন্তা মাথায় আসছে –যদি মারা যাই......!!! লিখেছেনঃ পুলক ঘটক এই মুহুর্তে ভগবানকে ডেকে রোগমুক্তি চাইব, নাকি মরার পর যাতে নরকে শাস্তির জন্য না পাঠায় সেই প্রার্থনা করব? আমি খেয়াল করে দেখেছি, চরম বিপদের সময় এমনকি মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তেও মানুষ ঈশ্বরকে ডাকে বাঁচার জন্য। পরকালে যাবে, সেখানে গিয়ে নরকের বদলে স্বর্গ পাবে –এই আশায় মানুষ বিপদের সময় ভগবানকে ডাকে না। আমি যেহেতু চিকিৎসকের স্মরণ নিয়েছি এবং বিজ্ঞানীদের আবিস্কৃত পন্থায় ডায়াগনোসিস ও ওষুধের ওপর ভরসা রেখেছি, তাই বাঁচার জন্য ভগবানকে ডাকব না। বরং মরার পর আমাকে যেন শাস্তি না দেয় তার জন্য অল্পবিস্তর ভাল কাজ করতে চাই। ধর্মে ভালকাজ বা ভগবানকে সন্তুষ্ট করার সবচেয়ে উত্তম উপায় হল ভগবানের সৈনিক হয়ে যাওয়া; ভগবানের সৈনিক হিসেবে তার ধর্মকে রক্ষার জন্য লড়াই করা। আমি লেখার মাধ্যমে আপাতত তাই করব। রোগশয্যায় থেকে একমাত্র লেখা ছাড়া কি-বা ভাল কাজ করার আছে? শুনুন তবে – "এরা সবসময় ধর্মের খারাপ দিকগুলি তুলে ধরে" -এই মন্তব্যটি ইদানিং অহরহ চোখে পড়ছে। কিছু মানুষ ফেসবুকে "ধর্মের খারাপ দিকগুলি" তুলে ধরার কারণে বহুমানুষ ক্ষুব্ধ। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, "ধর্মের খারাপ দিক" থাকে কিভাবে? এ তো অসম্ভব। ঈশ্বরের বাণী কি খারাপ হতে পারে? কোনো ধর্মের একটা লাইন বা একটা শব্দও খারাপ হতে পারেনা। ধর্মীয় বইয়ে খারাপ কোনোকিছু থাকলে বুঝতে হবে, ঐ বইটি আদৌ ঈশ্বরের বাণী নয়। অথবা ঐ বইয়ে যা আছে, তা খারাপ হলেও খারাপ নয়। কারণ তা ঈশ্বরের বাণী। ঐশী গ্রন্থে থাকলে ধরে নিতে হবে স্বামীর চিতায় নারীদের পুড়িয়ে মারা খারাপ কাজ নয়। আর, খারাপ মনে করলে বুঝে নিতে হবে ঐ বই আদৌ ঈশ্বরের কথা নয়। দুটোর একটা ঠিক হবে, দুটোই ঠিক হতে পারে না। ভগবান তার ধর্মে কৃতদাস রাখা নিষিদ্ধ, অবৈধ এবং অপরাধকর্ম হিসেবে ঘোষণা না দিয়ে থাকলে ধরে নিতে হবে দাসপ্রথা উত্তম। যুদ্ধে যারা হেরে গেছে তাদের নারী ও শিশুদের ধরে এনে যুদ্ধলব্ধ (মতান্তরে লুন্ঠনলব্ধ) মাল হিসেবে ভাগ করে নেওয়া, দাস বানানো, ধর্ষণ করার অধিকার দেওয়া, পশুর মত হাটেবাজারে মানুষ কেনাবেচা, যৌনদাসী উপহার নেওয়া, দাসীর উপর অধিকার ইত্যাদি কোনোকিছু ধর্মবইয়ে থাকলে ধরে নিতে হবে এগুলো ভাল কাজ। এগুলো খারাপ হলে ধরে নিতে বইটি ঈশ্বর পাঠাননি। মানুষ নিজ স্বার্থে এসব বিধান বানিয়েছে। ঐশী গ্রন্থের একটি শব্দও ভুল বা খারাপ হলে, সেই গ্রন্থটি আদৌ ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে এসেছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ আছে। কারণ ঈশ্বর ভুল করতে পারেন না। ধর্মীয় বইয়ের দাড়ি, কমা, সেমিকোলন থেকে শুরু করে কোনোকিছুই ভুল বা খারাপ হওয়ার সুযোগ নেই। আরেকটি দিক লক্ষ্মণীয়। তা হল, বহুমানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে "ধর্মের খারাপ দিক আছে।" বেশিরভাগ মানুষ ধর্মকে উত্তম মনে করলেও তার কিছু খারাপ দিকও আছে বলে বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাস স্ববিরোধী এবং ধর্মবিরোধী। বিশ্বাস করতে হবে, "ধর্মের কোনো খারাপ দিক নেই।" "সত্য বল, সুপথে চল ওরে আমার মন।"
    0 Comments 0 Shares 1083 Views 0 Reviews
  • শিক্ষা: বৈদিক যুগ থেকে বৌদ্ধ যুগ 
    শিক্ষা: বৈদিক যুগ থেকে বৌদ্ধ যুগ  লিখেছেনঃ পুলক ঘটক   বৈদিক শিক্ষা প্রণালী ছিল গুরুমুখী। গুরুর বাড়িতে গিয়ে ছাত্ররা শিক্ষাগ্রহণ করত, গুরুর বাড়িতে কাজকর্ম করত এবং গুরুর বাড়িতেই থাকত। ছাত্রদের সকল ভরণপোষণের দায়িত্ব বহন করতেন গুরুদেব নিজেই। বালক বয়সে গুরুগৃহে আসার পর ছাত্ররা আচার্যের কাছে সন্তানের মতই বড় হত। সে যুগে পশুপালন বিশেষত গো-পালন ছিল জীবীকার মুখ্য অবলম্বন। দানের গরুতে অনেক...
    0 Comments 0 Shares 1402 Views 0 Reviews
  • হিজাব আমার স্বাধীনতা

    লিখেছেনঃ ওমর ফারুক লুক্স

    'হিজাব আমার স্বাধীনতা। হিজাব পরবো কি পরবো না, এটা আমার সিদ্ধান্ত।'-
    সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কিংবা নাইজেরিয়ায় কি একজন মুসলিম নারী এই দাবী করতে পারবেন?

    ইসলামী দেশগুলোতে ছোট ছোট কন্যাশিশুদের জন্যেও স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকেই হিজাব পরা বাধ্যতামূলক।
    মুসলিম নারীরা কি কখনো এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন? নাকি তারা এই শিশুদের উপর চাপিয়ে দেয়া ধর্মীয় অনুশাসনকেও শিশুদের স্বাধীনতা বলে মনে করেন?

    মুসলিম নারীরা কোনো ইসলামী রাষ্ট্রে তাদের এই স্বাধীনতার কথা উচ্চারণই করবেন না, কারণ তারা ভালোকরেই জানেন, এসব দেশে হিজাব না-পরার স্বাধীনতার শাস্তি পিঠে ১০০ টা দোররা।

    যে সকল মুসলিম নারীরা দাবী করেন- 'হিজাব ইজ মাই চয়েস', তারা কি কখনো ইসলামী দেশগুলোতে অমুসলিম নারীদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেন? ইসলামী দেশগুলোতে অমুসলিম নারীদেরকে হিজাব পরতে বাধ্য করা যাবে না, তারা কি কখনো এই আন্দোলনটা করেন?
    করেন না, কারণ তারা জানেন, ইসলামী দেশে অমুসলিমদের স্বাধীনতার কথা বললে তাকে জেলে যেতে হবে।

    মুসলিম নারী-পুরুাষেরা 'হিজাব ইজ মাই চয়েস' বা 'হিজাব আমার স্বাধীনতা' এই আন্দোলনটা করেন ভারতে, ইয়োরোপে কিংবা আমেরিকার মতো অমুসলিম দেশগুলোতে। কারণ তারা আসলে সকল নারীদের জন্য পোশাকের স্বাধীনতা চান না, তারা নিজেদের হিজাবকে সবার উপর চাপিয়ে দিতে চান।
    আর তাই হিজাব কখনোই নারীর স্বাধীন পোশাক নয়। হিজাব একটা রাজনৈতিক পোশাক। হিজাব হচ্ছে নারীকে পরাধীন করে রাখার ইসলামী রাজনীতির সবচেয়ে বড় অস্ত্র। হিজাব একটা জিহাদ।
    একজন মুসলিম নারী যখন তার বোরখা বা হিজাবটা ছুড়ে ফেলে দেয়, সেটাই হচ্ছে তার স্বাধীনতা।
    হিজাব আমার স্বাধীনতা লিখেছেনঃ ওমর ফারুক লুক্স 'হিজাব আমার স্বাধীনতা। হিজাব পরবো কি পরবো না, এটা আমার সিদ্ধান্ত।'- সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কিংবা নাইজেরিয়ায় কি একজন মুসলিম নারী এই দাবী করতে পারবেন? ইসলামী দেশগুলোতে ছোট ছোট কন্যাশিশুদের জন্যেও স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকেই হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। মুসলিম নারীরা কি কখনো এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন? নাকি তারা এই শিশুদের উপর চাপিয়ে দেয়া ধর্মীয় অনুশাসনকেও শিশুদের স্বাধীনতা বলে মনে করেন? মুসলিম নারীরা কোনো ইসলামী রাষ্ট্রে তাদের এই স্বাধীনতার কথা উচ্চারণই করবেন না, কারণ তারা ভালোকরেই জানেন, এসব দেশে হিজাব না-পরার স্বাধীনতার শাস্তি পিঠে ১০০ টা দোররা। যে সকল মুসলিম নারীরা দাবী করেন- 'হিজাব ইজ মাই চয়েস', তারা কি কখনো ইসলামী দেশগুলোতে অমুসলিম নারীদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেন? ইসলামী দেশগুলোতে অমুসলিম নারীদেরকে হিজাব পরতে বাধ্য করা যাবে না, তারা কি কখনো এই আন্দোলনটা করেন? করেন না, কারণ তারা জানেন, ইসলামী দেশে অমুসলিমদের স্বাধীনতার কথা বললে তাকে জেলে যেতে হবে। মুসলিম নারী-পুরুাষেরা 'হিজাব ইজ মাই চয়েস' বা 'হিজাব আমার স্বাধীনতা' এই আন্দোলনটা করেন ভারতে, ইয়োরোপে কিংবা আমেরিকার মতো অমুসলিম দেশগুলোতে। কারণ তারা আসলে সকল নারীদের জন্য পোশাকের স্বাধীনতা চান না, তারা নিজেদের হিজাবকে সবার উপর চাপিয়ে দিতে চান। আর তাই হিজাব কখনোই নারীর স্বাধীন পোশাক নয়। হিজাব একটা রাজনৈতিক পোশাক। হিজাব হচ্ছে নারীকে পরাধীন করে রাখার ইসলামী রাজনীতির সবচেয়ে বড় অস্ত্র। হিজাব একটা জিহাদ। একজন মুসলিম নারী যখন তার বোরখা বা হিজাবটা ছুড়ে ফেলে দেয়, সেটাই হচ্ছে তার স্বাধীনতা।
    0 Comments 0 Shares 976 Views 0 Reviews
  • লিখেছেনঃ আশোক পাঠক
    কোরআনে কোন ভুল নাই কারন কোরআনে ভুল পাওয়া গেলেঃ
    ১। এটা ভুল অনুবাদ।
    ২। আগে পিছে ডানে বামের আয়াত পড়তে হবে।
    ৩। এটার তাফসীর দেখতে হবে।
    ৪। এটা ভুল তাফসীর।
    ৫। এটা বিকৃত তাফসীর।
    ৬। শানে নুজুল দেখতে হবে।
    ৭। শানে নুজুলও ভুল বা বিকৃত হয়।
    ৮। হাদিসের ব্যাখ্যা দিতে হবে।
    ৯। প্রেক্ষাপট দেখতে হবে।
    ১০। এটা ভিন্ন প্রেক্ষাপট।
    ১১। আলেমরা কি বলে দেখতে হবে।
    ১২৷ আলেমদের মধ্যেও কাফের আছে।
    ১৩। আপনি বিজ্ঞানই বুঝেন না কোরআন বুঝবেন কেম্নে?
    ১৪। ১৪০০ বছর আগে যেটা কোরআনে লিখা আছে মাত্র ২০০ বছর আগে তা বিজ্ঞান জানতে পেরেছে।
    ১৫। কোরআন পড়ে অনেক বিজ্ঞানী মুসলিম হয়েছে।
    ১৬৷ কোরআন যদি মিথ্যা হত তাহলে আগুনে পুড়ত।
    ১৭। কোরআনই একমাত্র ধর্মীয় কিতাব যা মুখস্থ করা যায়।
    ১৮। কোরআন বুঝা এত্ত সহজ!
    ১৯। অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী।
    ২০। কোরআন বুঝলে আপনি কোরআনের ভুল ধরতে পারতেন না।
    ২১। কোরআন বুঝার জ্ঞান আপ্নার নাই।
    ২২। কোরআন পড়ার আগে তা আপনাকে সত্য বলে মেনে নিতে হবে।
    ২৩। আপনি মানসিক রোগী।
    ২৪৷ এটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত। এখানে কোপাকুপি বলতে কোলাকুলি বুঝতে হবে।
    ২৫। এটা হাই লেভেল, মানুষের মাথার উপর দিয়ে যাবে।
    ২৬। বাসার ঠিকানা দে, তোর নাম পাল্টাস না কেন?
    ২৭। তুই নাস্তিক নাকি হিন্দু?
    ২৮। তুই ইসলাম বিদ্বেষী।
    ২৯। বাই*ঞ্চোদ, কু*ত্তার বাচ্চা, জা*নোয়ার।
    ৩০। আরে বোকাচোদা না বুঝে লাফায় বেশি।
    ৩১। কোরআনই বিজ্ঞান।
    ৩২। আপনি মূর্খ।
    ৩৩। তুই জা*রজ।
    ৩৪। আরবি জানেন?
    ৩৫। তখনকার ৬বছর মানে এখনকার ২০ বছর।
    -------------------
    আর লিখতে পারছি না
    আসলে কাফেরদের অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন তাই আপ্নে কোরআন বুঝেন নি, তবে মরার পর বুঝবেন।
    লিখেছেনঃ আশোক পাঠক কোরআনে কোন ভুল নাই কারন কোরআনে ভুল পাওয়া গেলেঃ ১। এটা ভুল অনুবাদ। ২। আগে পিছে ডানে বামের আয়াত পড়তে হবে। ৩। এটার তাফসীর দেখতে হবে। ৪। এটা ভুল তাফসীর। ৫। এটা বিকৃত তাফসীর। ৬। শানে নুজুল দেখতে হবে। ৭। শানে নুজুলও ভুল বা বিকৃত হয়। ৮। হাদিসের ব্যাখ্যা দিতে হবে। ৯। প্রেক্ষাপট দেখতে হবে। ১০। এটা ভিন্ন প্রেক্ষাপট। ১১। আলেমরা কি বলে দেখতে হবে। ১২৷ আলেমদের মধ্যেও কাফের আছে। ১৩। আপনি বিজ্ঞানই বুঝেন না কোরআন বুঝবেন কেম্নে? ১৪। ১৪০০ বছর আগে যেটা কোরআনে লিখা আছে মাত্র ২০০ বছর আগে তা বিজ্ঞান জানতে পেরেছে। ১৫। কোরআন পড়ে অনেক বিজ্ঞানী মুসলিম হয়েছে। ১৬৷ কোরআন যদি মিথ্যা হত তাহলে আগুনে পুড়ত। ১৭। কোরআনই একমাত্র ধর্মীয় কিতাব যা মুখস্থ করা যায়। ১৮। কোরআন বুঝা এত্ত সহজ! ১৯। অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। ২০। কোরআন বুঝলে আপনি কোরআনের ভুল ধরতে পারতেন না। ২১। কোরআন বুঝার জ্ঞান আপ্নার নাই। ২২। কোরআন পড়ার আগে তা আপনাকে সত্য বলে মেনে নিতে হবে। ২৩। আপনি মানসিক রোগী। ২৪৷ এটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত। এখানে কোপাকুপি বলতে কোলাকুলি বুঝতে হবে। ২৫। এটা হাই লেভেল, মানুষের মাথার উপর দিয়ে যাবে। ২৬। বাসার ঠিকানা দে, তোর নাম পাল্টাস না কেন? ২৭। তুই নাস্তিক নাকি হিন্দু? ২৮। তুই ইসলাম বিদ্বেষী। ২৯। বাই*ঞ্চোদ, কু*ত্তার বাচ্চা, জা*নোয়ার। ৩০। আরে বোকাচোদা না বুঝে লাফায় বেশি। ৩১। কোরআনই বিজ্ঞান। ৩২। আপনি মূর্খ। ৩৩। তুই জা*রজ। ৩৪। আরবি জানেন? ৩৫। তখনকার ৬বছর মানে এখনকার ২০ বছর। ------------------- আর লিখতে পারছি না আসলে কাফেরদের অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন তাই আপ্নে কোরআন বুঝেন নি, তবে মরার পর বুঝবেন।
    0 Comments 0 Shares 967 Views 0 Reviews
  • যেদিন প্রথম বললাম, "কচু খেতে আমার ভাল্লাগেনা"। সেদিন বাসায় দেখার মত দৃশ্য তৈরী হল। আমার বাবা বুক চেঁপে ধরে সোফায় বসে পড়লেন। মা শাড়ির আঁচল মুখে চেপে ডুকরে কেঁদে উঠে বললেন, 'এ কেমন ছেলে পেটে ধরেছি আমি?' আমার বড় বোনের হাত থেকে কাঁচের গ্লাস পড়ে ঝনঝন শব্দে ভেঙে গেল। আমার দাদী নির্বাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। পরিবারের সবার সাথে আমার কথাবার্তা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেল। বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণাও চলে এসেছে।

    এই বাসায় থাকার শর্ত হল আমাকে কচু খেতে হবে, সারাদিনে ৫-৭ বার কচুর গুণকীর্তন করতে হবে এবং আগামী বছর কচুর জন্মভূমি তথা সবচেয়ে বড় খামার পরিদর্শনে যেতে হবে। এছাড়াও বছরে ২ বার নির্দিষ্ট দিনে কচুর উৎসব যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করতে হবে। তার ভেতর এক উৎসব আবার প্রাণী হত্যার উৎসব। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই নিয়মই চলে আসছে। তাছাড়াও কচু বাদে অন্য সবজী যারা খায় তাদের ঘৃণা করতে হবে, অভিশাপ দিতে হবে। তাদের কচু খাওয়ার দাওয়াত দিতে হবে। দাওয়াত কবুল না করলে যুদ্ধ করতে হবে তাকে জোর করে কচু খাওয়ানোর জন্য। একজন সভ্য মানবিক মানুষ হিসেবে এসব অসভ্য বর্বর নিয়ম আমি মানতে পারছিনা।

    আরো অনেক অদ্ভুত, নৃশংস নিয়ম রয়েছে। যেমন কেউ যদি কচু সম্পর্কে কোন বিরুপ মন্তব্য করে তাহলে তার গর্দান উড়িয়ে দেয়া আমাদের ঐতিহ্য। আসলে আমরা কচুকে একটু বেশিই ভালবাসি কিনা। কেউ কচু নিয়ে উল্টাপাল্টা কিছু বললে সহ্য করা যায়, বলেন? আমাদেরও তো কচুনুভূতি রয়েছে, নাকি? আমরা ছোলার কিংবা গাজরের হালুয়াতেও হালকা কচু দিয়ে দেই, আবার বিরিয়ানিতেও কচু খাই। অবাক হওয়ার কিছু নেই, আমরা এরকমই। সব কিছুর সাথে কচু মিক্স না করলে খাবার হজমই হতে চায়না।

    কেউ যদি পেস্ট্রীর সাথে কচু মেলাতে না চায় তখনও আমরা নেই ঠেলি। মানবে না মানে? মানতেই হবে। কচুর পুষ্টিগুণ তো সেই ১৬০০ বছর আগেই প্রমাণিত। আর তোমরা আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে পেষ্ট্রী, স্যান্ডউইচ, বার্গার খাওয়া শিখেছো তো মাত্র কয়েক বছর আগে। তার মানে আমার কচুই সেরা।

    আমরা সব কিছুর সাথে কচুর সম্পর্ক খুঁজে বেড়াই। বিজ্ঞানের সাথে কচু মেলাতে আমরা পারদর্শী। যেমন ধরুন নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে যেয়ে চাঁদের মাটিতে কচু গাছ দেখেছেন। এরপর থেকে তিনি কচু ছাড়া আর কিচ্ছু মুখে দেননা। অথবা মাইকেল জ্যাকসন কচু খেয়ে স্টেজে গান গাইতে উঠতেন। শেষ জীবনে তিনি কচু খেয়েই বেঁচে ছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

    তবে এই কচু গ্রুপের ভেতরেও আবার প্রচুর গ্রুপিং আছে। কেউ কচুর লতি গ্রুপ, কেউ কচুরমুখী, কেউ আবার কচুর ডাটা, কেউ কচুশাক। শাক গ্রুপ মুখী গ্রুপকে দেখতেই পারেনা। আর ডাটা গ্রুপ তো ঘোষণা দিয়েই রেখেছে লতি আসলে কচুর কোন অংশই নয়। তাদের কতল করে ফেলতে হবে। আবার এসব শাখাগুলোর উপশাখাও অনেক। এছাড়াও রয়েছে ওলকচু, মানকচু ইত্যাদি নামের হাজার খানেক গ্রুপ। তারা সবাই নিজেদের একমাত্র সত্য কচু বলেই দাবী করে।

    কচুর পরিবারে জন্মালে আপনাকে মনেপ্রাণে মানতে হবে কচুই পৃথিবীর একমাত্র সবজী। এর তরকারিই দুনিয়ার সেরা। বাদবাকি কোন সবজী আসলে অরিজিনাল সবজীই নয়। কচু খেয়ে আপনার গলা কুটকুট করলেও, চুলকে ছিড়ে যেতে চাইলেও খবরদার টু শব্দ করবেন না। একদম চেঁপে যান। বলেছেন কি মরেছেন। কচুখোরদের হাতে আপনি কচুকাটা হয়ে যেতে পারেন। মাত্রতো আর কটা দিন। চুপচাপ নাক চেঁপে ধরে কচুটা ঢক করে গিলে ফেলুন তো।

    ওই। আবার শুরু করে দিয়েছে, 'কচুই সেরা, কচুই সেরা। কচু ছাড়া আর কোন সবজী নেই। কচু ছাড়া আর কোন সবজী নেই। ......... '

    (স্যাটায়ার পোস্ট। পুরোটাই কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে কোন মিল নাই। কোন অংশ মিলে গেলে তা নিছক অনিচ্ছাকৃত অথবা পাঠকের অলীক কল্পনামাত্র।'
    যেদিন প্রথম বললাম, "কচু খেতে আমার ভাল্লাগেনা"। সেদিন বাসায় দেখার মত দৃশ্য তৈরী হল। আমার বাবা বুক চেঁপে ধরে সোফায় বসে পড়লেন। মা শাড়ির আঁচল মুখে চেপে ডুকরে কেঁদে উঠে বললেন, 'এ কেমন ছেলে পেটে ধরেছি আমি?' আমার বড় বোনের হাত থেকে কাঁচের গ্লাস পড়ে ঝনঝন শব্দে ভেঙে গেল। আমার দাদী নির্বাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। পরিবারের সবার সাথে আমার কথাবার্তা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেল। বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণাও চলে এসেছে। এই বাসায় থাকার শর্ত হল আমাকে কচু খেতে হবে, সারাদিনে ৫-৭ বার কচুর গুণকীর্তন করতে হবে এবং আগামী বছর কচুর জন্মভূমি তথা সবচেয়ে বড় খামার পরিদর্শনে যেতে হবে। এছাড়াও বছরে ২ বার নির্দিষ্ট দিনে কচুর উৎসব যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করতে হবে। তার ভেতর এক উৎসব আবার প্রাণী হত্যার উৎসব। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই নিয়মই চলে আসছে। তাছাড়াও কচু বাদে অন্য সবজী যারা খায় তাদের ঘৃণা করতে হবে, অভিশাপ দিতে হবে। তাদের কচু খাওয়ার দাওয়াত দিতে হবে। দাওয়াত কবুল না করলে যুদ্ধ করতে হবে তাকে জোর করে কচু খাওয়ানোর জন্য। একজন সভ্য মানবিক মানুষ হিসেবে এসব অসভ্য বর্বর নিয়ম আমি মানতে পারছিনা। আরো অনেক অদ্ভুত, নৃশংস নিয়ম রয়েছে। যেমন কেউ যদি কচু সম্পর্কে কোন বিরুপ মন্তব্য করে তাহলে তার গর্দান উড়িয়ে দেয়া আমাদের ঐতিহ্য। আসলে আমরা কচুকে একটু বেশিই ভালবাসি কিনা। কেউ কচু নিয়ে উল্টাপাল্টা কিছু বললে সহ্য করা যায়, বলেন? আমাদেরও তো কচুনুভূতি রয়েছে, নাকি? আমরা ছোলার কিংবা গাজরের হালুয়াতেও হালকা কচু দিয়ে দেই, আবার বিরিয়ানিতেও কচু খাই। অবাক হওয়ার কিছু নেই, আমরা এরকমই। সব কিছুর সাথে কচু মিক্স না করলে খাবার হজমই হতে চায়না। কেউ যদি পেস্ট্রীর সাথে কচু মেলাতে না চায় তখনও আমরা নেই ঠেলি। মানবে না মানে? মানতেই হবে। কচুর পুষ্টিগুণ তো সেই ১৬০০ বছর আগেই প্রমাণিত। আর তোমরা আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে পেষ্ট্রী, স্যান্ডউইচ, বার্গার খাওয়া শিখেছো তো মাত্র কয়েক বছর আগে। তার মানে আমার কচুই সেরা। আমরা সব কিছুর সাথে কচুর সম্পর্ক খুঁজে বেড়াই। বিজ্ঞানের সাথে কচু মেলাতে আমরা পারদর্শী। যেমন ধরুন নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে যেয়ে চাঁদের মাটিতে কচু গাছ দেখেছেন। এরপর থেকে তিনি কচু ছাড়া আর কিচ্ছু মুখে দেননা। অথবা মাইকেল জ্যাকসন কচু খেয়ে স্টেজে গান গাইতে উঠতেন। শেষ জীবনে তিনি কচু খেয়েই বেঁচে ছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এই কচু গ্রুপের ভেতরেও আবার প্রচুর গ্রুপিং আছে। কেউ কচুর লতি গ্রুপ, কেউ কচুরমুখী, কেউ আবার কচুর ডাটা, কেউ কচুশাক। শাক গ্রুপ মুখী গ্রুপকে দেখতেই পারেনা। আর ডাটা গ্রুপ তো ঘোষণা দিয়েই রেখেছে লতি আসলে কচুর কোন অংশই নয়। তাদের কতল করে ফেলতে হবে। আবার এসব শাখাগুলোর উপশাখাও অনেক। এছাড়াও রয়েছে ওলকচু, মানকচু ইত্যাদি নামের হাজার খানেক গ্রুপ। তারা সবাই নিজেদের একমাত্র সত্য কচু বলেই দাবী করে। কচুর পরিবারে জন্মালে আপনাকে মনেপ্রাণে মানতে হবে কচুই পৃথিবীর একমাত্র সবজী। এর তরকারিই দুনিয়ার সেরা। বাদবাকি কোন সবজী আসলে অরিজিনাল সবজীই নয়। কচু খেয়ে আপনার গলা কুটকুট করলেও, চুলকে ছিড়ে যেতে চাইলেও খবরদার টু শব্দ করবেন না। একদম চেঁপে যান। বলেছেন কি মরেছেন। কচুখোরদের হাতে আপনি কচুকাটা হয়ে যেতে পারেন। মাত্রতো আর কটা দিন। চুপচাপ নাক চেঁপে ধরে কচুটা ঢক করে গিলে ফেলুন তো। ওই। আবার শুরু করে দিয়েছে, 'কচুই সেরা, কচুই সেরা। কচু ছাড়া আর কোন সবজী নেই। কচু ছাড়া আর কোন সবজী নেই। ......... ' (স্যাটায়ার পোস্ট। পুরোটাই কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে কোন মিল নাই। কোন অংশ মিলে গেলে তা নিছক অনিচ্ছাকৃত অথবা পাঠকের অলীক কল্পনামাত্র।'
    0 Comments 0 Shares 975 Views 0 Reviews
More Stories